মেসিদের দেখে ‘পরপার থেকে গর্ববোধ করছেন’ ম্যারাডোনাও
তৃতীয় বিশ্বকাপ শিরোপার সন্ধানেই কাতারে পাড়ি জমিয়েছে আর্জেন্টিনা। কিন্তু প্রথম ম্যাচেই সৌদি আরবের বিপক্ষে তাদের অপ্রত্যাশিত হার যেন থমকে দিয়েছিল কোটি ভক্তের স্বপ্নকে। ঘুরে দাঁড়াতে অবশ্য সময় নেয়নি আলবিসেলেস্তেরা। একের পর এক দারুণ পারফরম্যান্সে তারা পা রেখেছে ফাইনালে। অধিনায়ক লিওনেল মেসির সঙ্গে জ্বলে উঠেছে গোটা দল, স্বপ্ন ছুঁয়ে দেখা থেকে আর মাত্র এক ম্যাচ দূরে আর্জেন্টিনা। উত্তরসূরীদের এমন পারফরম্যান্সে প্রয়াত আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি দিয়েগো ম্যারাডোনাও গর্ববোধ করছেন বলে মনে করছেন তার বড় ছেলে দিয়েগো আরমান্দো ম্যারাডোনা সিনাগ্রা।
৩৬ বছর আগে শেষবার ম্যারাডোনার হাত ধরে বিশ্বকাপ জয় করেছিল আর্জেন্টিনা। মেক্সিকোর মাটিতে ১৯৮৬ সালে একক নৈপুণ্যেই দলকে চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছিলেন তিনি। এরপর দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও সোনালী ট্রফিটা আর হাতে ওঠেনি আলবিসেলেস্তেদের। ২০১৪ সালে ফাইনাল পর্যন্ত গিয়েছিল তারা। কিন্তু জার্মানির কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল তাদের। সেবারও মেসি অনবদ্য পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছিলেন। কিন্তু দল হিসেবে শেষটা রাঙানো হয়নি তার বা আর্জেন্টিনা– কারোরই। তবে এবার মরুর বুকে অদম্য মানসিকতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা। সেরা ছন্দের মেসির সঙ্গে দলের অন্যান্যদের নজরকাড়া ফুটবল জোরালো করেছে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ খরা কাটানোর সম্ভাবনা।
শিরোপার জন্য আর্জেন্টাইনদের এমন আপ্রাণ চেষ্টা দেখে দুই বছর আগে পরপারে চলে যাওয়া সাবেক তারকা ফুটবলার ম্যারাডোনাও গর্ববোধ করছেন বলে মনে করছেন সিনাগ্রা। শনিবার স্প্যানিশ গণমাধ্যম মার্কা তাদের এক প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে 'এল পেলুসা'র বড় ছেলের ভাবনা। ইতালির ক্লাব নাপোলি ইউনাইটেডের কোচের দায়িত্বে থাকা সিনাগ্রা বলেছেন, 'যেভাবে তারা (খেলোয়াড়রা) জার্সির মর্যাদা রক্ষা করে যাচ্ছে এবং যে (বিশ্বকাপ জয়ের) আকাঙ্ক্ষা তারা প্রদর্শন করছে, তাতে আমার বাবা (ম্যারাডোনা) গর্বিত।… আমার মনে হয়, উপরে (পরপার) থেকে আমার বাবা তাদের নিয়ে গর্ববোধ করছেন।'
কাতারে এসে যেন নিজের বয়স ভুলে গেছেন মেসি! ৩৫ বছরেও যে ধার হারাননি, সেটাই চোখে আঙুল দিয়ে প্রতিনিয়ত সবাইকে দেখিয়ে যাচ্ছেন 'লা পুল্গা'। ছয় ম্যাচে পাঁচ গোল করে আছেন চলতি বিশ্বকাপের গোলদাতাদের তালিকার শীর্ষে। সঙ্গে অ্যাসিস্ট করেছেন তিনটি।
সিনাগ্রার মতে, মেসিকেও তাই তার বাবার মতো করেই উপভোগ করা উচিত সবার, 'মেসিকে উপভোগ করার সময় এসে পড়েছে, যেভাবে আমার বাবাকে আমরা উপভোগ করেছিলাম। দেখুন, মেসিকেও আমাদের একইভাবে উপভোগ করা উচিত। আমি তাদের (মেসি ও ম্যারাডোনা) তুলনা করতে পছন্দ করি না। কারণ আমি মনে করি না এটা করার কোনো কারণ আছে।'
নিজেকে মেসির এক নম্বর ভক্ত দাবি করে তিনি যোগ করেছেন, 'এটা (মেসি-ম্যারাডোনার তুলনা) কোন ভালো কিছু বয়ে আনে না। যদি আমরা রোববারে (ফাইনাল) জিতি, তাদের গল্পগুলো একই হয়ে যাবে। কিন্তু আমি লিওনেলকে উপভোগ করতে চাই এবং আমার বাবা ও তার পরস্পরকে জড়িয়ে ধরা যে ছবিটা ইন্টারনেটে ঘুরে বেড়াচ্ছে, সেটা আমার খুবই প্রিয়। আমি আশা করি, এটা (বিশ্বকাপ জয়) যাতে ঘটে এবং যদি এটা হয় আমি লিওর জন্য অত্যন্ত খুশি হব। আমি তার এক নম্বর ভক্ত এবং সবসময়ই তাকে ভালোবাসি।'
Comments