নাটকীয় লড়াইয়ে শিরোপাধারী ফ্রান্সকে হারিয়েও বিদায় তিউনিসিয়ার
নকআউট পর্ব আগেই নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় নির্ভার ছিল শিরোপাধারী ফ্রান্স। বেঞ্চের শক্তি ঝালিয়ে নিতে নিয়মিত তারকাদের ছাড়া শুরুর একাদশ সাজাল তারা। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত রূপে পাওয়া গেল না তাদের। দ্বিতীয়ার্ধে গোল হজমের পর কিলিয়ান এমবাপে, আতোঁয়ান গ্রিজমান, ওসমান দেম্বেলেরা মাঠে নামলেও স্কোরলাইন থাকল অপরিবর্তিত। ম্যাচের একদম শেষ মুহূর্তে গ্রিজমান বল জালে জড়ালেও তা বাতিল হলো অফসাইডের কারণে। অঘটনের জন্ম দিয়ে অসাধারণ জয় তুলে নিল তিউনিসিয়া। তারপরও কাতার বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিতে হলো তাদের।
বুধবার রাতে আসরের 'ডি' গ্রুপের ম্যাচে এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে ফ্রান্সকে ১-০ গোলে হারিয়েছে তিউনিসিয়া। নাটকীয় লড়াইয়ে বিরতির পর তাদের পক্ষে জয়সূচক গোলটি করেন ফরোয়ার্ড ওয়াহাবি খাজরি। তবে গত বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়নদের পরাস্ত করেও ছিটকে গেছে আফ্রিকার দলটি।
তিন ম্যাচে এক জয় ও এক ড্রয়ে তিউনিসিয়ার পয়েন্ট ৪। তাদেরকে টপকে গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠেছে অস্ট্রেলিয়া। একই সময়ে শুরু হওয়া 'ডি' গ্রুপের আরেক ম্যাচে ডেনমার্ককে ১-০ গোলে হারিয়েছে সকারুরা। তিন ম্যাচে দুই জয়ে তাদের অর্জন ৬ পয়েন্ট। গোল ব্যবধানে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সমান পয়েন্ট পাওয়া ফ্রান্স। তলানিতে থাকা ডেনিশদের পয়েন্ট ১।
ম্যাচের অষ্টম মিনিটেই বল জালে পাঠিয়েছিল তিউনিসিয়া। ওয়াহাবি খাজরির ফ্রি-কিকে ফরাসি গোলরক্ষক স্তিভ মাদাঁন্দাকে পরাস্ত করেছিলেন নাদের ঘান্দ্রি। কিন্তু অফসাইডের কারণে গোলটি বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।
১৭তম মিনিটে রাফায়েল ভারানে শারীরিক শক্তিতে পেরে ওঠেননি আনিস বেন স্লিমানির সঙ্গে। তার কাছ থেকে বল পেয়ে মোহামেদ আলি বেন রমদানের শট বাইরের দিকের জালে লাগে।
আট মিনিট পর সুযোগ পায় ফ্রান্স। পাল্টা-আক্রমণে ইউসুফ ফোফানা খুঁজে নেন কিংসলে কোমানকে। তবে বাজে প্রথম স্পর্শের পর তার শট থাকেনি লক্ষ্যে। পাঁচ মিনিট পর বেন স্লিমানির প্রচেষ্টা রুখে দেন মাদাঁন্দা। গোলশূন্যভাবে বিরতিতে যায় দুই দল।
ফের খেলা শুরুর পরও দাপট অব্যাহত রাখে জালেল কাদরির শিষ্যরা। তারা এগিয়ে যায় ম্যাচের ৫৮তম মিনিটে। আইসা লাইদুনির পাসে অনেকটা দৌড়ে দারুণভাবে লক্ষ্যভেদ করেন খাজরি। সেই যাত্রায় তিনি ফাঁকি দেন প্রতিপক্ষের দুই ডিফেন্ডার ও গোলরক্ষককে।
পিছিয়ে পড়ার পর ফরাসি কোচ দিদিয়ের দেশম বদল আনেন বেশ কিছু। ৬৩তম মিনিটে এমবাপে, ৭৩তম মিনিটে গ্রিজমান ও ৭৯তম মিনিটে দেম্বেলেকে নামানো হয়। উদ্দেশ্য ছিল একটাই, গোলের দেখা পাওয়া।
মাঠে নামার পরপরই দেম্বেলের কর্নারে ঘটতে পারত তিউনিসিয়ার জন্য বিপদ। বাঁক খেয়ে নিচু হওয়া বল কোনোমতো ঠেকান গোলরক্ষক আইমেন দাহমেন।
পরের মিনিটে ফের ভীতি ছড়ায় ফরাসিরা। গ্রিজমানের কর্নারে আট গজ দূর থেকে অ্যালেক্স দিয়াসির হেড থাকেনি লক্ষ্যে। দুই মিনিট পর দেম্বেলে সরাসরি দাহমেনের দিকে বল মেরে সুযোগ নষ্ট করেন। সাত মিনিট পর এমবাপেকেও হতাশ করেন তিনি।
দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা আট মিনিটের শেষ মিনিটে জালে বল পাঠান গ্রিজমান। ডি-বক্সে তিউনিসিয়ার রক্ষণের বল বিপদমুক্ত করতে না পারার ফায়দা তুলে নেন তিনি। কিন্তু অনেকটা সময় নিয়ে ভিএআরের সাহায্যে গোলটি বাতিল করেন রেফারি। ফলে জয় নিশ্চিত হয় তিউনিসিয়ার।
Comments