‘নেতাজি সুভাষ বসু, মাস্টারদা সূর্য সেন এখানে এসেছেন’

ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবীদের স্মৃতি বহন করছে শতাব্দী প্রাচীন বোস ব্রাদার্স
বোস ব্রাদার্স
শতাব্দী প্রাচীন বোস ব্রাদার্স

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থী তৌফিক, মিনহাজ, ঈশিতা ও সত্যজিৎ বুধবার বিকেলে বন্দর নগরীর নন্দন কানন এলাকার ঐতিহাসিক মিষ্টির দোকান বোস ব্রাদার্সে চা-মিষ্টি খেতে যান।

এটি ছিল তাদের প্রথম এই দোকানে আসা।

'আমি আমার দাদার কাছ থেকে এই দোকান সম্পর্কে অনেক কিছু শুনেছি। এই দোকানের ইতিহাস জেনে এখানে আসার জন্য অনেকদিন ধরে ইচ্ছে ছিল কিন্তু সময় সুযোগ হচ্ছিল না। গতকাল বন্ধুরা মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম আজ এখানে আসব। তাই চলে এলাম,' বলেন ঈশিতা।

'যখন ঈশিতা আমাদের এই দোকানের ইতিহাস সম্পর্কে বলছিল, তখন আমরা জায়গাটি দেখার এবং দোকানের চা- মিষ্টি খেতে আগ্রহী হলাম, বলেন সত্যজিৎ।

'আমরা শুনেছি যে দোকানটি ১০০ বছরেরও বেশি পুরোনো এবং নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু, মাস্টারদা সূর্য সেন এবং প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারসহ ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবীরা এখানে মিষ্টি খেতে এসেছিলেন।'

'এটা আমাদের গর্ব যে ব্রিটিশবিরোধী বীরদের স্মৃতি বহনকারী ঐতিহাসিক দোকানটি এখনও একই জায়গায় চালু রয়েছে,' বলেন তৌফিক।

শতাব্দী প্রাচীন বোস ব্রাদার্স ১৯২০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তুলশী ধামের কাছে নন্দন কানন মোড়ে অবস্থিত দোকানটি মানসম্পন্ন মিষ্টি বিক্রির জন্য বিখ্যাত। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দোকানে বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি সাজিয়ে রাখা আছে।

এছাড়া সিঙ্গারা, সমুচা, কেক, প্যাটিসসহ বিভিন্ন ফাস্টফুড আইটেম বিক্রি হচ্ছে। দোকানে বসে আড্ডা দিতে দিতে ক্রেতারা চায়ের ফরমাসও দেন। দোকানে গ্রাহকদের সেবা দিতে দেখা গেছে প্রায় আট জন কর্মীকে।

বোস পরিবারের তৃতীয় প্রজন্মের সদস্য তরুণ কান্তি বোস এখন দোকানটি চালান। তিনি বলেন, দোকানটি তার দাদা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

'আমার বাবা খুব ছোট ছিলেন যখন আমার দাদা ১৯২০ সালে দোকানটি প্রতিষ্ঠা করেন,' তিনি বলেন।

'আমি আমার দাদা এবং বাবার কাছ থেকে শুনেছি যে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু যখন চট্টগ্রামে আসেন, তখন মিষ্টি খেতে এখানে এসেছিলেন।'

'আমার বাবা সুধাংশু বিমল বসুও একজন ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবী এবং মাস্টারদা সূর্য সেনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন,' তিনি বলেন,

'দোকানটি ছিল ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবীদের মিলনস্থল। মাস্টারদা সূর্য সেন, কল্পনা দত্ত এবং প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারসহ অন্যান্য বিপ্লবীরা নিয়মিত দোকানে আসতেন।'

তিনি বলেন, 'দাদা মারা যাওয়ার পর আমার বাবা দোকানের দায়িত্ব নেন। ১৯৮৮ সালে বাবার মৃত্যুর পর আমি দোকান চালাতে শুরু করি।'

তিনি বলেন, 'দোকানটি ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের স্মৃতি বহন করছে।'

'আমরা ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে দোকানটি চালাচ্ছি।'

সুধাংশু বিমল বোসের ভাস্তে রঞ্জিত রায় চৌধুরী বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে পৈত্রিক ব্যবসা বাঁচাতে বোস পরিবার হিমশিম খাচ্ছে।

তিনি বলেন, 'ঐতিহাসিক এই দোকান রক্ষায় সরকারের উদ্যোগ নেওয়া উচিত।'

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka slams desecration of nat’l flag in Kolkata

The government yesterday strongly condemned the desecration of Bangladesh’s national flag and the burning of Chief Adviser Prof Muhammad Yunus’s effigy in Kolkata as “deplorable acts”.

4h ago