বিএনপির সমাবেশের ‘স্বার্থে’ ছাত্রলীগের সম্মেলন ৬ ডিসেম্বর

bcl
ছবি: সংগৃহীত

বিএনপি ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় যেন সুষ্ঠু ভাবে সমাবেশ করতে পারে সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ছাত্রলীগের ৮ ডিসেম্বরের কেন্দ্রীয় সম্মেলন ৬ তারিখে করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

তিনি আজ রোববার পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে উদ্বোধনী বক্তব্যে এ তথ্য জানান। ওবায়দুল কাদের তার রাজধানীর বাসভবন থেকে সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, 'ছাত্রলীগের সম্মেলন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৮ ডিসেম্বর থেকে ৬ ডিসেম্বর নিয়ে এসেছেন। দলীয় সভাপতির বার্তা আমি ছাত্রলীগকে পৌঁছে দিয়েছি। শুধুমাত্র বিএনপি একটা অজুহাত দেখাচ্ছে যে, ৮ তারিখে ছাত্রলীগের সম্মেলন, কী করে তারা ১০ তারিখে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করবেন। আজকে সেজন্য প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের সম্মেলন ৬ তারিখে নিয়ে এসেছেন। সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত থাকার কথা আছে। আমরা বাঁধা দিচ্ছি না, আমরা বাঁধা দেবো না। কিন্তু আগুন নিয়ে যদি খেলতে চান, যদি লাঠি নিয়ে খেলতে চান তার সমুচিত জবাব দেবো জনগণকে সঙ্গে নিয়ে।'

প্রথমে এই সম্মেলনের জন্য ৩ ডিসেম্বর তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে পরে তা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে স্থগিত করা হয়। সেসময় সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছিল, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় সফরে জাপান সফরের যাওয়ার কথা ছিল, যদিও পরে বাতিল করা হয়েছে। সেই সফর থেকে প্রধানমন্ত্রীর ফেরার কথা ছিল ৩ ডিসেম্বর। আর সে কারণেই ছাত্রলীগের সম্মেলন ৩ ডিসেম্বরের বদলে ওই মাসের অন্য কোনোদিন নির্ধারণের নির্দেশনা দিয়েছিলেন তিনি।

পরে নতুন করে আগামী ৮ ও ৯ ডিসেম্বর এই সম্মেলনের আয়োজনের কথাও জানানো হয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে। গত ২০ নভেম্বর ছাত্রলীগের দফতর সম্পাদক ইন্দ্রনীল দেব শর্মা রনির সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়ে বলা হয়, ৮ ডিসেম্বর সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। আগের সিদ্ধান্ত থেকে ২ দিন এগিয়ে ৬ ডিসেম্বর সম্মেলনের নতুন তারিখের কথা জানালেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

এর আগে সংগঠনটির সম্মেলন হয়েছিল ২০১৮ সালের মে মাসে। ওই বছরের জুলাইয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি পদে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক পদে গোলাম রাব্বানী দায়িত্ব পান। তারা পদ হারালে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে সভাপতি পদে আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক পদে লেখক ভট্টাচার্য আসেন। ২০২০ সালের ৪ জানুয়ারি 'ভারমুক্ত' হন তারা।

বিএনপিকে একটি সন্ত্রাসী দল উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'কানাডার আদালত বিএনপিকে একটি সন্ত্রাসী দল হিসেবে ঘোষণা করেছ। তাদের রাজনীতি হচ্ছে আন্দোলনের নামে জ্বালাও পোড়াও...রাজনীতি না করার শর্তে মুচলেকা দিয়ে লন্ডনে পালিয়ে যাওয়া নেতাকে নেতা বানানো এত সহজ নয়। মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার সময় শেষ।'

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বিএনপি মহাসচিবের উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে বলেন, 'দুনিয়ার কোন দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আছে? আপনাদের নেত্রীই তো বলেছিলেন পাগল আর শিশু ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ নয়। এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা এখন আদালত কর্তৃক নিষিদ্ধ, এটা এখন মিউজিয়ামে। এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উদ্ভট দাবি করছে বিএনপি।'

ওবায়দুল কাদের বলেন, 'তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুঃস্বপ্ন দেখে কোনো লাভ নেই, আগামী জাতীয় নির্বাচন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেভাবে অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশেও সেভাবে হবে।

কুমিল্লার সমাবেশে কোথায় গেল হাঁকডাক, জনগণের উপস্থিতি ছিল খরা, কোথায় গেল স্রোত আর ঢল এমনটা জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ঢাকা শহরে দেখা যাবে কত ধানে কত চাল।

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, 'দেশে দেশে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। কোথাও কোনো দেশে কেউ সরকার পতনের দাবি করছে না। অথচ যে সরকার উন্নয়নের রেকর্ড করেছে, বিএনপি সেই সরকারের পতন চায়। কিসের আন্দোলন? ১০ ডিসেম্বর আমরাও মাঠে থাকব। দেখা যাবে কত ধানে কত চাল।'

দলের নেতা-কর্মীদের বিএনপির বিরুদ্ধে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, 'যারা হাওয়া ভবন করে দেশের সম্পদ লুট করেছেন, দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন, আজ ওই দলের বিরুদ্ধে আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।'

পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম আউয়ালের সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু।

এছাড়াও আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ডক্টর শাম্মি আহমেদ, শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান, পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হাকিম হাওলাদারসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

Comments

The Daily Star  | English

From gravel beds to tourists’ treasure

A couple of decades ago, Panchagarh, the northernmost district of Bangladesh, was primarily known for its abundance of gravel beds. With thousands of acres of land devoted to digging for the resource, the backbone of the region’s rural economy was based on those natural resources.

18h ago