ভারতে নির্যাতনের শিকার তরুণীকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর
বেঙ্গালুরুতে গত বছর ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনায় ভুক্তভোগী তরুণীকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করেছে ভারত।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় যশোরের বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের একটি দলের কাছে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়।
বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) বিপ্লব কুমার সরকার।
তিনি বলেন, 'ভিক্টিমকে ডিএমপির জিম্মায় বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন তিনি ঢাকার পথে আছেন।'
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএমপির একজন কর্মকতা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রোববার হাসপাতালে তার শারীরিক পরীক্ষা করা হবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মেনে পাচার ও নির্যাতনের বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য আদালতে উপস্থাপন করা হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'উক্ত তরুণী বেশ কয়েকটি ঘটনার সাক্ষীও। বাংলাদেশে দায়ের হওয়া মামলায় তিনি সাক্ষ্য দেবেন।'
ভারতে ওই বাংলাদেশি তরুণীকে পাচার ও দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে ৭ বাংলাদেশিসহ মোট ১০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ড দেওয়া হয়েছে। ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের রাজধানী বেঙ্গালুরুর একটি বিশেষ আদালত এই দণ্ডাদেশ দিয়েছেন।
গত সোমবার এক রায়ে চাঁদ মিয়া, মোহাম্মদ রিফাদুল ইসলাম ওরফে হৃদয় বাবু, মোহাম্মদ আলামিন হোসেন, রকিবুল ইসলাম, মোহাম্মদ বাবু শেখ, মোহাম্মদ ডালিম ও আজিম হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।
এ ছাড়া, তানিয়া খানকে ২০ বছর এবং মোহাম্মদ জামালকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
অপর ২ বাংলাদেশিকে ফরেনার্স অ্যাক্টে দোষী সাব্যস্ত করে ৯ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মামলায় অভিযুক্ত ১২ জনের মধ্যে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে।
ভুক্তভোগীসহ অভিযুক্তরা সবাই বাংলাদেশি নাগরিক, যারা ভারতে প্রবেশ করে বেঙ্গালুরুতে অবৈধভাবে বসবাস করে আসছিলেন।
অপরাধ সংঘটিত হওয়ার ২৮ দিনের মধ্যে চাঞ্চল্যকর এই মামলার অভিযোগপত্র দাখিল এবং ৩ মাসে বিচার শেষ করা হয়।
বাংলাদেশে প্রথমে ধর্ষণের একটি ভিডিও ভাইরাল হলে ঘটনাটি জানাজানি হয় এবং পরে বেঙ্গালুরুতে এটি সংঘটিত হয়েছে বলে প্রমাণিত হয়।
এ ঘটনায় ভারতীয় দণ্ডবিধির (আইপিসি) বিভিন্ন ধারা এবং অনৈতিক পাচার (প্রতিরোধ) আইনের পাশাপাশি ফরেনার্স অ্যাক্টের অধীনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল।
ধর্ষণের ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে ভারত ও বাংলাদেশে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং জাতীয় পর্যায়ে আলোচনার জন্ম দেয়।
Comments