স্ত্রীর জিডি: মুরাদ হাসানের ফোন বন্ধ, মেসেজ পাঠিয়ে খুঁজছে পুলিশ
প্রতিমন্ত্রীর পদ হারানো ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে গত ৬ জানুয়ারি নির্যাতনের অভিযোগে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন তার স্ত্রী ডা. জাহানারা এহসান। জিডি করার আগে তিনি জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর '৯৯৯' এ কল করে পুলিশের সহায়তা চেয়েছিলেন। এর পর পরই মুরাদ হাসান তার ধানমন্ডির বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান।
পুলিশ বলছে, ওই ঘটনার পর থেকে মুরাদ আর বাসায় আসেননি বলে তারা জানতে পেরেছেন। তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
ডা. জাহানারা থানায় অভিযোগ করার পর তদন্ত কর্মকর্তা ধানমন্ডি থানার উপপরিদর্শক রাজীব হাসান জিডি তদন্তের অনুমতি চেয়ে আদালতে আবেদন করেন। ৯ জানুয়ারি আদালত তদন্তের অনুমতি দেন।
এর পর তিন সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও তদন্তে কোনো অগ্রগতির কথা জানাতে পারেনি পুলিশ।
তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রাজীব হাসান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে নিয়ম অনুযায়ী অভিযুক্তের বক্তব্য নেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু তার ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। তার মোবাইলে মেসেজ পাঠানো হয়েছে।
মুরাদকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়ে থানায় ডাকা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনো নোটিশ পাঠানো হয়নি। তার বন্ধু-বান্ধবের মাধ্যমে খবর নেওয়া হয়েছে। তিনি এখন ব্যস্ত আছেন বলে জেনেছি। আমরা সময়মতো তার সঙ্গে যোগাযোগ করব।
মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে জিডিতে মারধর ও হত্যার হুমকির কথা উল্লেখ করেছিলেন তার স্ত্রী। তিনি জানান, তাকে মারধর করা হচ্ছে। এর পরই তিনি ধানমন্ডি থানায় গিয়ে জিডি করে পুলিশের সহায়তা চান।
এসআই রাজীব হাসান বলেন, ওই ঘটনার পর তার বাসার আশপাশে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছিল। ডা. জাহানারার সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আছে। তিনি আমাদের বলেছেন, আপাতত সবকিছু স্বাভাবিক আছে। মুরাদ হাসান আর বাসায় আসেননি বা অন্য কোনোভাবে হুমকি-ধামকি দেননি।
এ ব্যাপারে মন্তব্যের জন্য সোমবার সন্ধ্যায় ডা. জাহানারা এহসানকে ফোন করা হলে, তিনি মিটিংয়ে থাকার কথা জানিয়ে কথা বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। মুরাদ হাসানের মন্তব্যের জন্য তার মোবাইলে একাধিকবার কল দিয়েও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, মুরাদ হাসান সম্প্রতি জামালপুরে তার নির্বাচনী এলাকায় গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ করেছেন।
উল্লেখ্য, নারীর প্রতি চরম অবমাননাকর, অশালীন, শিষ্টাচারবহির্ভূত বক্তব্য প্রদান করায় গত ৬ ডিসেম্বর মুরাদ হাসানকে প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পর তাকে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। পরে তাকে সরিষাবাড়ী উপজেলা ও স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্যপদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। পরে তিনি কানাডায় প্রবেশের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে দেশে ফিরে আসেন।
Comments