তিন সুযোগ হাতছাড়ার পর ইবাদতের তোপ
অধিনায়ককে প্রভাবিত করে অযথা দুটি রিভিউ নষ্ট করতে ভূমিকা রাখলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। আবার তার বলেই পড়ল দুই ক্যাচ। পরে সহজ একটি রানআউটও হাতছাড়া হলো। বাংলাদেশের এমন সুযোগ হাতছাড়ার মাঝে প্রতিরোধ তৈরি করেন উইল ইয়ং-রস টেইলর। পরে ইয়ংকে ফিরিয়ে প্রতিরোধ ভেঙে হেনরি নিকোলস ও টম ব্লান্ডেলকেও ফিরিয়ে দিলেন ইবাদত।
চতুর্থ দিনের শেষ সেশনের এই প্রতিবেদন লেখা পর পর্যন্ত ৫৫.৩ ওভারে ৫ উইকেটে ১৩৬ রান করেছে নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশে থেকে তারা এগিয়ে ৬ রানে। ৩২ রান নিয়ে খেলছেন টেইলর। ৩১ রানে একবার জীবন পাওয়া ইয়ং ৬৯ রান করে বোল্ড হন ইবাদতের বলে। তৃতীয় উইকেটে তার আগে এসে যায় ৭৩ রানের জুটি। ওই ওভারেই নিকোলস কোনো রান করার আগেই বোল্ড হন ইবাদতের বলে। নিজের পরের ওভারে ব্লান্ডেলকে এলবিডব্লিউ করে দেন তিনি।
টেইলর-ইয়ং ফিরতে পারতেন অনেক আগে, মিরাজের বলে। টেইলর হতে পারতেন রান আউটও। সেসব সুযোগ হাতছাড়া হয় বাংলাদেশের।
সকালে ১৩০ রানের লিডের পর বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় ৪৫৮ রানে। এরপর নামা নিউজিল্যান্ডকে চেপে ধরেছিল বাংলাদেশ। রান আটকে দিয়ে বাড়াচ্ছিল চাপ।
নবম ওভারে আসে সাফল্য। প্রথম ইনিংসে দারুণ বল করেও উইকেট না পাওয়া তাসকিন আহমেদ ধরেন প্রথম শিকার। তার বলে স্টাম্পে টেনে বোল্ড হন টম ল্যাথাম।
এরপর ডেভন কনওয়ে-ইয়ং মিলে প্রতিরোধ গড়োলেও রানের চাকা ছিল মন্থর। আঁটসাঁট বল করে চাপ বাড়াচ্ছিল বাংলাদেশ। সেই চাপেই মিলে যায় পরের উইকেট। ৩৪ রানের জুটির পর বিদায় নেন প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান কনওয়ে। ইবাদত হোসেনের বলে ব্যাটে-প্যাডে লেগে তার ক্যাচ যায় স্লিপে। ঝাঁপিয়ে চোখ ধাঁধানো ক্যাচ নেন সাদমান ইসলাম। আম্পায়ার অবশ্য এলবিডব্লিউ-ক্যাচ কোনো আউটই দেননি, পরে রিভিউ নিয়ে উল্লাসে মাতে বাংলাদেশ।
খানিক পর ৩১ রানে বিদায় নিতে পারতেন ওপেনার ইয়ং। মিরাজের বলে কাট করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছিলেন তিনি। কিছুটা নিচু হওয়া সেই ক্যাচ গ্লাভসে জমাতে পারেননি উইকেটকিপার লিটন দাস। এরপর ইবাদতের বলে হতাশাজনকভাবে একটি মূল্যবান রিভিউ নষ্ট হয়। ইবাদতের লেগ স্টাম্পের বাইরের বল খেলতে গিয়ে থাই প্যাডে লাগিয়েছিলেন টেইলর। কট বিহাইন্ডের আবেদন করে বাংলাদেশ। বোলার ও কিপার ছিলেন না আত্মবিশ্বাসী। কিন্তু ফিল্ডার মিরাজের গলা শোনা যায়। তিনি অধিনায়ক মুমিনুলকে বলে বল আগে লেগেছে ব্যাটে। রিভিউ নিলে দেখা যায় ব্যাট ছিল না আশেপাশে।
এরপর তাসকিন আহমেদের বলেও আরেকটি রিভিউ নষ্ট হয় মিরাজের ভুল পর্যবেক্ষণে। ইয়র্কার লেন্থের ডিফেন্স করেছিলেন টেইলর। বল পায়ের পাতায় লেগেছে ভেবে হালকা আবেদন করেন তাসকিন। আম্পায়ার সাড়া না দিলে মিরাজ আবারও মুমিনুলকে বলেন, তিনি দেখেছেন বল আগে লেগেছে টেইলরের পায়ে। রিভিউ নিলে দেখা যায় বল লেগেছে একদম মাঝব্যাটে।
এর আগে ইবাদতের বলে শুরুতে নষ্ট হয়েছিল একটি রিভিউ। অর্থাৎ তিনটি রিভিউই হারিয়ে বসে বাংলাদেশ।
রিভিউ হারানোর হতাশার সঙ্গে খানিক পর যোগ হয় ক্যাচ হাতছাড়ার আক্ষেপ। মিরাজের বলে স্লগ সুইপে ক্যাচ উঠিয়েছিলেন ১৮ রানে থাকা টেইলর। ডিপ স্কয়ার লেগে সহজ ক্যাচ ফেলে দেন এই ম্যাচে পাঁচটা ক্যাচ নেওয়া সাদমান।
৫০তম ওভারে ইবাদতের বলে অফ সাইডে ঠেলেছিলেন ইয়ং। বল ফিল্ডারের হাতে থাকায় রান ছিল না। কিন্তু অপর প্রান্ত থেকে টেইলর রানের জন্য বেরিয়ে গিয়েছিলেন অনেকটা। তার ফেরার সময়ও ছিল না। কিন্তু ব্যাকআপ করে স্টাম্প ভাঙার জন্য নন স্ট্রাইকিং প্রান্তে কোনো ফিল্ডার ছিল না বাংলাদেশের, বোলার ইবাদতও বল ধরে লাগাতে পারেননি স্টাম্পে। ২৯ রানে আরেক জীবন পান টেইলর।
দুই ওভার পরই ইবাদত আনেন জোড়া সাফল্য। ইবাদতের শর্ট বলে পুল করতে গিয়েছিল ইয়ং। বলে ছিল না যথেষ্ট বাউন্স। লাইন মিস করে তিনি বোল্ড। পরে নিকোলসকে দারুণ এক ভেতরে ঢোকা বলে শিকার ধরেন ইবাদত। এরপর রিভিউ নিয়ে বাঁচতে পারেননি ব্লান্ডেল।
Comments