লিটন সাবলীলভাবে, সহজভাবে বোলারদের মোকাবিলা করেছে: সুজন
টেস্ট ক্রিকেটে গত বছরটা দুর্দান্ত কেটেছে লিটন দাসের। নতুন বছরও তিনি শুরু করেছেন দারুণভাবে। সেঞ্চুরির আশা জাগিয়ে বাজে শটে বিদায় নেওয়ার আগে তার ব্যাটিং ছিল খুঁতহীন। নিউজিল্যান্ডের কোনো বোলারই তাকে বিপাকে ফেলতে পারেননি। মাউন্ট মঙ্গানুইতে বাংলাদেশের চালকের আসনে থাকায় তার রয়েছে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ অবদান। তার প্রশংসায় টাইগারদের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন জানান, লিটনের ব্যাটিং সব সময়ই 'গুড টু ওয়াচ'।
সোমবার সিরিজের প্রথম টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা শেষে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে ৭৩ রানে। হাতে ৪ উইকেট থাকায় এই লিড আরও বাড়িয়ে নেওয়ার ভালো সুযোগ রয়েছে তাদের। স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে করা ৩২৮ রানের জবাবে সফরকারীরা ৬ উইকেট খুইয়ে তুলেছে ৪০১ রান। ট্রেন্ট বোল্টের শিকার হওয়ার আগে লিটন খেলেন ১৭৭ বলে ৮৬ রানের নান্দনিক ইনিংস। তার ইনিংসে ছিল ১০টি চার। অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল জায়গায় দাঁড়িয়ে তাড়া করে উইকেটরক্ষক টম ব্লান্ডেলের গ্লাভসবন্দি হন তিনি।
দিন শেষে বিসিবির পাঠানো ভিডিও বার্তায় বাংলাদেশের ব্যাটারদের প্রশংসা করতে গিয়ে সুজন আলাদা করে বলেন লিটনের কথা, 'সবাই ভালো ব্যাট করেছে। লিটনের ব্যাটিং তো সাবলীল। ও যেমন ব্যাট করে, সেরকমই করেছে। লিটনের ব্যাটিং সব সময়ই "গুড টু ওয়াচ"। টাইমিং এত ভালো! আজ ব্যাটিং দেখে একবারও মনে হয়নি কোনো রকম চাপে আছে। এত সাবলীলভাবে, সহজভাবে বোলারদের মোকাবিলা করেছে! দুর্দান্ত!'
মুশফিকুর রহিমের বিদায়ের পর ক্রিজে যান ডানহাতি লিটন। তখন বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৪ উইকেটে ২০৩ রান। শুরু থেকেই নির্ভার ছিলেন এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। চাপ না নিয়ে করেন দৃষ্টিনন্দন ব্যাটিং। অধিনায়ক মুমিনুল হকের সঙ্গে তিনি গড়েন ৩১৭ বলে ১৫৮ রানের জুটি। সুবাস জাগিয়ে মুমিনুল সেঞ্চুরিবঞ্চিত হওয়ার পর লিটনও বাড়ান হতাশা। বাজে ওই শটের আগে লিটন ছাপ রাখেন ছন্দের ছাপ। তার ড্রাইভ, পুল ও কাট সবই ছিল নিয়ন্ত্রিত।
লিটন যেভাবে তার ইনিংস এগিয়ে নেন, সেটাও চোখে লেগে থাকার মতো। উইকেটে গিয়ে রান করছিলেন বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে। এরপর কিউই বোলাররা কৌশল বদলে আক্রমণাত্মক হয়ে উঠলে তিনি তাড়াহুড়ো করেননি। বরং দেন ধৈর্যের পরিচয়। তার অনায়াস ব্যাটিংয়ের ইতিবাচক প্রভাব পড়ে মুমিনুলের উপরও। দিনের শুরুতে নড়বড়ে থাকা এই বাঁহাতি আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন পরে। মূলত তাদের কল্যাণেই তৃতীয় দিনে ৮৯ ওভার খেলে ৪ উইকেট হারিয়ে ২২৬ রান যোগ করেছে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের পেসারদের পার করতে হয়েছে কঠিন সময়।
সামর্থ্যের তুলনায় লিটনের সেরাটা কম সময়ই পাওয়া গেছে। সেটা মনে করিয়ে দিলেও সুজনের কণ্ঠে ঝরেছে তৃপ্তি আর সন্তুষ্টি, 'লিটন কত ভালো খেলোয়াড় আমরা জানি। (সবশেষ টি-টোয়েন্টি) বিশ্বকাপে রান না করার পরও আমরা জানতাম ওর সামর্থ্য (কেমন)। লিটনের সামর্থ্যের তুলনায় সব সময় রান কম করেছে। কিন্তু সে সবসময় সুন্দর খেলে, আজকেও।'
উল্লেখ্য, গত ২০২১ সালে টেস্টে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের তালিকায় লিটন ছিলেন দশ নম্বরে। ৭ ম্যাচের ১২ ইনিংসে ৪৯.৫০ গড়ে তিনি করেন ৫৯৪ রান। ৫ ফিফটির পাশাপাশি ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির অপেক্ষা তিনি ঘোচান পাকিস্তানের বিপক্ষে। ঘরের মাঠে চট্টগ্রামে করেছিলেন ২৩৩ বলে ১১৪ রান।
Comments