ঢাকা-চট্টগ্রাম দ্রুতগতির রেল যোগাযোগ: কাজে বিলম্ব, অপেক্ষা বাড়ছে
ঢাকা ও চট্টগ্রাম রুটে আখাউড়া-লাকসাম এলাকায় রেললাইন সম্প্রসারণের সময়সীমা দ্বিতীয়বারের মতো বাড়ানোর কারণে এই রুটে আরামদায়ক ও দ্রুতগতির রেল যোগাযোগের জন্য মানুষের যে অপেক্ষা তা আরও দীর্ঘায়িত হচ্ছে।
এই রুটে আখাউড়া-লাকসাম এলাকায় ৭২ কিলোমিটার রেলপথ কিছুটা সংকীর্ণ থাকায় যাত্রায় অতিরিক্ত সময় ব্যয় হয়। তবে, রাজধানী ও বন্দরনগরীর মধ্যে বাকি ৩২১ কিলোমিটার রেললাইন ইতোমধ্যে ডাবল লাইনে রূপান্তরিত হয়েছে।
আখাউড়া-লাকসাম এলাকায় ডাবল লাইন নির্মাণ এবং বিদ্যমান ট্র্যাকটিকে ডুয়েল গেজে রূপান্তরের জন্য ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে একটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়। যেটি ২০১৪ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল।
তবে, অনুমোদনের প্রায় দুই বছর পর মূল নির্মাণকাজ ২০১৬ সালের নভেম্বরে শুরু হয় এবং প্রকল্পের মেয়াদ এ বছরের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
এখন প্রকল্প কর্তৃপক্ষ ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত দুই বছরের জন্য মেয়াদ বাড়িয়ে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) সংশোধন করতে চায়। তবে, রেল কর্তৃপক্ষ আপাতত এক বছরের জন্য মেয়াদ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে এবং পরে ডিপিপি সংশোধন করা হবে বলে জানিয়েছে সূত্র।
এই প্রকল্পে ব্যয় হবে ছয় হাজার ৫০৪ কোটি ৫৪ লাখ টাকা, যার অধিকাংশই আসবে দাতা সংস্থার তহবিল থেকে। এ বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৭৩ শতাংশ কাজের অগ্রগতি হয়েছে।
বিলম্বের কারণ
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে এক বছরে প্রকল্পের মাত্র সাত শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে।
প্রকল্প পরিচালক (পিডি) শহিদুল ইসলাম জানান, গত বছর দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে কাজ বন্ধ ছিল এবং মহামারির কারণে নির্মাণসামগ্রী সরবরাহে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে।
জমি অধিগ্রহণ ও যারা জমির মালিক নন কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সেখানে বসবাস করছেন এবং ব্যবসা করছেন, তাদের পুনর্বাসন নিয়ে জটিলতার কারণে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে দেরি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
নির্মাণ এলাকা থেকে চারটি খাদ্য গুদাম স্থানান্তর করতে তাদেরকে দীর্ঘ আলোচনার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে এবং জানুয়ারিতে খাদ্য বিভাগ এতে সম্মত হয়েছে, তিনি ২২ শে মার্চ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন।
শহীদুল ইসলাম জানান, প্রকল্প বাস্তবায়নকালে তাদের কয়েকটি সেতু এবং বাঁধের উচ্চতায়ও পরিবর্তন আনতে হয়েছে।
মেয়াদ বাড়ানোর নির্দিষ্ট সময়সীমা উল্লেখে অস্বীকৃতি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি- এক বছরের ত্রুটিযুক্ত দায়বদ্ধতাসহ প্রকল্পটিতে আরও দুই বছর সময় লাগবে এবং আমরা ইতোমধ্যে ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়াই প্রকল্পের সময়সীমা বাড়ানোর চেষ্টা করেছি।’
পিডি বলেন, ‘আমরা উপযুক্ত বাস্তবতার কারণেই সময় বাড়ানোর প্রস্তাব করেছি।’
লাকসাম থেকে লালমাই পর্যন্ত দশ কিলোমিটার অংশের কাজ প্রায় শেষ হয়েছে এবং এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে জনসাধারণের জন্য তা উন্মুক্ত করা হবে বলেও জানান পিডি।
শহীদুল ইসলাম আরও জানান, যদিও চূড়ান্তভাবে তাদেরকে ডিপিপি সংশোধন করতে হবে, তবে প্রকল্পের মোট ব্যয় বাড়ানো হবে না।
প্রতিবেদনটি ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন সুমন আলী
Comments