গাজীপুর পার হওয়ার পর মনে হলো হরতাল নাকি কারফিউ চলছে: মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজকে আমি যখন ময়মনসিংহে রওনা দিলাম। গাজীপুর পার হওয়ার পর মনে হলো হরতাল চলছে নাকি কারফিউ চলছে। রাস্তায় কোনো গাড়ি নেই, ট্রাক নেই। কিছু ছোট ছোট ট্রাকে আমাদের কিছু নেতা-কর্মীরা আসছে। এরপরে শুনলাম মাঝখানে লাঠিসোঁটা নিয়ে নাকি ছাত্রলীগের সোনার ছেলেরা দাঁড়িয়ে আছে।
তিনি বলেন, 'তারপর যখন কাছে পৌঁছলাম দেখলাম সোনার ছেলেরা লেজ গুটিয়ে পালিয়ে গেছে। আমাদের ছেলেরা তাদের তাড়িয়ে দিয়েছে। শত বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে আজকের সভা প্রমাণ করেছে বাংলাদেশের মানুষ তারা কোনো বাধা মানবে না। তারা অবশ্যই এই দেশকে মুক্ত করে ছাড়বে।
আজ শনিবার বিকেলে ময়মনসিংহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট মাঠে বিএনপির সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।
সারাদেশে বিভাগীয় সমাবেশের ধারাবাহিকতায় আজ ময়মনসিংহ বিভাগে সমাবেশ করছে বিএনপি। বেলা দুইটার দিকে শুরু হওয়া সমাবেশে সভাপতিত্ব করছেন ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক এ কে এম শফিকুল ইসলাম।
সমাবেশে ময়মনসিংহ, শেরপুর, জামালপুর, নেত্রকোনা, টাঙ্গাইল ও কিশোরগঞ্জ বিএনপির নেতা-কর্মীরা উপস্থিত হয়েছেন।
গত বুধবার চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ডে সমাবেশের মধ্য দিয়ে বিভাগীয় সমেবশ শুরু করে বিএনপি। জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, দলীয় কর্মসূচিতে গুলি করে নেতা-কর্মীদের হত্যার প্রতিবাদ, নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে বিভাগীয় (দলের সাংগঠনিক বিভাগ) পর্যায়ে সমাবেশের কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি।
সমাবেশে ফখরুল বলেন, 'আজকে আমরা এখানে এসেছি আমাদের দেশকে আবার আমাদের জায়গায় ফিরিয়ে আনতে। আমরা এসেছি এই যে চেয়ারটা খালি আছে। কার জন্য? দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্য। তিনি আমাদের মাঝে নেই। তিনি আমাদের দলের প্রধান। তিনি গণতন্ত্রের জন্য আজীবন সংগ্রাম করেছেন। তাকে এখন মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে অন্ত্যরীণ করে রাখা হয়েছে। সেজন্য আমরা এই চেয়ারটা খালি রেখেছি আমাদের ময়মনসিংহ বিভাগীয় সম্মেলনে।'
'আপনাদের অনুরোধ জানাতে চাই, এই তরুণদের, আমাদের দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ, যাকে নিয়ে আমরা স্বপ্ন দেখি যে, তিনি আমাদের মুক্তির পথ দেখাচ্ছেন ও দেখাবেন- সেই আমাদের তরুণ নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাকে যদি ফিরিয়ে আনতে চাই, দেশনেত্রীর যদি মুক্তি চাই, আমাদের লাখ লাখ মানুষের মিথ্যা মামলা যদি প্রত্যাহার করতে চাই- তাহলে আপনাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'আমাদের ৫ জন বীর সেনা ছাত্রদলের নূরে আলম, স্বেচ্ছাসেবক দলের আব্দুর রহিম, যুবদলের নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জের শাওন, যশোরের আব্দুল আলিম তারা প্রাণ দিয়েছেন। রক্ত ঢেলে দিয়েছেন, পুলিশের গুলির সামনে বুকে পেতে দিয়ে আওয়াজ তুলেছে যে বাংলাদেশকে মুক্ত করতে হবে। আপনারা তাদের সম্মান দেখাতে চান, তাদের শ্রদ্ধা করতে চান, তাদের রক্তদানকে বৃথা যেতে দেবেন না বলে শপথ নিয়েছেন। ওই শপথে আজকে আমাদের অটুট থাকতে হবে।'
Comments