বইমেলায় মেট্রোরেলের প্রভাব
আজ সোমবার, বেলা ৫টা ১০ মিনিট। উত্তরা মিরপুর আগারগাঁও ফার্মগেট থেকে এসে মেট্রোরেল থামল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে। উপচেপড়া ভিড়। এই স্টেশন থেকে বেরিয়ে প্রায় ২০০-৩০০ মানুষ এক সঙ্গে বইমেলার গেট দিয়ে প্রবেশ করছে। যেন একটা মিছিল। এই চিত্র গত বছর দেখা যায়নি। বইমেলা গড়িয়েছে পঞ্চম দিনে, ছুটির দিন না তবুও প্রচুর দর্শনার্থী এসেছেন মেলায়।
জটলে থেকে একজনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি ঢাকার একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন শাহাদাত সুফল। মেলায় আসার কারণ হিসেবে বলছেন, প্রথম দিকে মেলায় আসি ঘুরতে। ঘুরতে ঘুরতে ক্যাটালগ সংগ্রহ করি। তারপর বাছাই করে নির্বাচিত কিছু বই কেনার চেষ্টা করি।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছোট ও মাঝারি দোকানের স্টল কর্মীদের কিছুটা অলস সময় পার করতে দেখা গেছে। তবে ব্যতিক্রম চিত্র প্যাভিলিয়নে। সেখানে চারপাশে মানুষ থাকে কেউ না কেউ কিনে বই। বিক্রয়কর্মীরা বলছেন দর্শক সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও বই বিক্রি বা পাঠক বাড়েনি।
ঐতিহ্যবাহী প্রকাশনী মুক্তধারার স্টল ব্যবস্থাপক জসীম উদ্দিন বলেন, মানুষ চলাচল করছে, বইও দেখতে আসছেন, ছবি তুলছেন। তবে কিনছেন কম। মেলার শুরুর দিকে এমনই থাকে।
দেখা হয় লেখক ও চলচ্চিত্র পরিচালক তানভীর মোকাম্মেলের সঙ্গে। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আমি মেলায় আজ আমি প্রথম এসেছি। বেশ গুছানো মনে হয়েছে। ছুটির দিন না, তবু অনেক মানুষ। মানুষের যাতায়ত কিছুটা সহজ হয়েছে। বিশেষ করে মেট্রোরেলের কারণে লোক সমাগম বাড়ছে। তবে পাঠক দর্শনার্থীদের এতো আগমন, নিশচয় প্রেরণা দেয় সৃজনশীল মানুষকে। এই মেলায় তার ২টি বই প্রকাশ হবে, কিন্তু এখনো আসেনি বলে জানিয়েছেন
বাংলা একাডেমির জনসংযোগ বিভাগ থেকে জানা যায়, আজ ৬৬টি নতুন বই এসেছে। গল্পের বই এসেছে ৯টি, উপন্যাস ১২টি, প্রবন্ধ ৫টি, কবিতা ১০টি, গবেষণা ১টি, জীবনী ১১টি, মুক্তিযুদ্ধ ১, ভ্রমণ ৪, ইতিহাস ১, স্বাস্থ্য ২, ধাঁধা ৬টি, ধর্মীয় ১টি, অনুবাদ ২, অন্যান্য ১টি।
বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় স্মরণ : কাঙাল হরিনাথ মজুমদার শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তপন মজুমদার। আলোচনায় অংশ নেন জাফর ওয়াজেদ এবং আমিনুর রহমান সুলতান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মুনতাসীর মামুন। আলোচনার শুরুতে কাঙাল হরিনাথ মজুমদারের জীবন ও কর্মভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।
'আজ লেখক বলছি' অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন চলচ্চিত্রকার ও লেখক তানভীর মোকাম্মেল, শিশুসাহিত্যিক বেণীমাধব সরকার, সাংবাদিক ও গবেষক কাজল রশীদ শাহীন এবং কবি ফারুক আহমেদ।
Comments