যুক্তরাষ্ট্রে মোদি: আলোচনায় যে ৫ বিষয়
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমন্ত্রণে ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ওয়াশিংটন যাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
আগামীকাল বুধবার নরেন্দ্র মোদি নিউইয়র্ক পৌঁছবেন। পরদিন হোয়াইট হাউসে তাকে অভ্যর্থনা জানাবেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।
তার এই সফরে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, মোদি-বাইডেন আলোচনায় থাকবে ৫ বিষয়।
- সই হতে পারে অন্তত ২টি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি। এর একটি হচ্ছে ৩০০ কোটি ডলারের অত্যাধুনিক 'এমকিউ-৯বি সি গার্ডিয়ান' অস্ত্রবাহী ড্রোনসংক্রান্ত চুক্তি। অন্যটি ভারতে তৈরি 'তেজস' যুদ্ধবিমানের ইঞ্জিন নিয়ে। এটি প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে জেনারেল ইলেকট্রিকের সহায়তায় কর্ণাটকের রাষ্ট্রায়ত্ত হিন্দুস্তান অ্যারোনটিকস লিমিটেডে (হ্যাল) তৈরি হবে।
- যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়েও নরেন্দ্র মোদি আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। আলোচনার একটি প্রধান বিষয় হতে পারে ভারতীয়দের ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রিতা দূর করা। ভারতীয়দের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা প্রক্রিয়ায় এমনকি ৬০০ দিন পর্যন্ত অপেক্ষার রেকর্ড আছে।
- ইন্দো-প্যাসিফিক ইকোনমিক ফ্রেমওয়ার্ক ফর প্রসপারিটির (আইপিইএফ) অধীনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে অনুরোধ করবে বলেও আশা করা হচ্ছে।
- আগামী ২২ জুন দ্বিতীয়বারের মতো মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে বক্তব্য দেওয়ার সম্ভাবনার কথা আছে প্রধানমন্ত্রী মোদি। এর আগে কোনো ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ২ বার কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে কথা বলেননি। এমনকি, সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল ও দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলা ছাড়া আর কেউ এই সম্মান পাননি।
- নরেন্দ্র মোদি ২০টি শীর্ষ মার্কিন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের নেতাদের সঙ্গে দেখা করবেন। এ ছাড়া, দেড় হাজারের বেশি প্রবাসী ভারতীয় এবং ব্যবসায়ী নেতাদের সমাবেশে তিনি ভাষণ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
৩ দিনের এই সফরে হোয়াইট হাউসে রাষ্ট্রীয় নৈশভোজ ও বাইডেনের পরিবারের সঙ্গে ব্যক্তিগত নৈশভোজে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গেও মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন তিনি। জাতিসংঘ সদরদপ্তরে 'ইন্টারন্যাশনাল ইয়োগা ডে'র অনুষ্ঠানেও যোগ দেবেন মোদি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এই রাষ্ট্রীয় সফর এশিয়া বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতির জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এশিয়ার বৃহৎ শক্তি চীনের ক্রমাগত প্রভাব বিস্তার ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের জন্য উদ্বেগজনক।
নয়াদিল্লিভিত্তিক এশিয়া সোসাইটি পলিসি ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো সি. রাজা মোহন বার্তা সংস্থাটিকে বলেন, 'এটি কোনো রুটিন সফর নয়। এই সফরে ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ মোড় নেবে৷'
তার মতে, 'চীন বা চীন বিরোধিতার প্রশ্ন নয়, এখানে এশিয়ায় ক্ষমতার রাজনীতিতে নতুন ভারসাম্য তৈরির বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। বহুজাতিক এশিয়ায় কোনো একক শক্তি আধিপত্য বিস্তার করতে পারে না।'
Comments