দুর্নীতিতে সাধারণ বীমা করপোরেশনের ক্ষতি ২১০ কোটি টাকা
সাধারণ বীমা করপোরেশনের (এসবিসি) বোর্ড সভার ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রিমিয়াম রেখে ১ দশকে ২৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির এক ব্যবস্থাপক।
অডিট প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশের মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিএজি) অডিট প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০০৯-১০ সালে আবুল কাশেম এসবিসির ঢাকার নিউমার্কেট শাখার ব্যবস্থাপক থাকাকালে রাজধানীর ইমামগঞ্জে এক্সিম ব্যাংক লিমিটেডের চকবাজার শাখায় অ্যাকাউন্ট খোলেন।
এ কাজ করতে আবুল কাশেম বিমা প্রতিষ্ঠানটির ৪৯২তম সভার সিদ্ধান্ত জাল করে উপ-মহাব্যবস্থাপক টিএম জাহিদের নাম ও পদবী ব্যবহার করেন। এসবিসির কর্মচারী নন এমন ব্যক্তি রফিকুল ইসলামকে প্রতিষ্ঠানটির উপ-মহাব্যবস্থাপক হিসেবে পরিচয় দেন।
'সাধারণ বীমা করপোরেশন বিআর৯' নামে চলতি হিসাবটি যৌথভাবে পরিচালনা করেন আবুল কাশেম ও রফিকুল ইসলাম।
সেই অনুসারে, ২০১০ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ২৭ কোটি ৭৮ লাখ টাকা এই অ্যাকাউন্টে জমা হয়। এগুলো ছিল বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নৌ বীমার বিপরীতে পরিশোধিত প্রিমিয়াম।
অডিট প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই অ্যাকাউন্ট থেকে বিভিন্ন সময়ে ২৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা তোলার পর বাকি টাকা সেখানে রাখা হয়।
বোর্ডের ৪৯২তম সভার সিদ্ধান্তকে কাজে লাগিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলা হলেও অডিটররা অ্যাকাউন্টের পক্ষে কোনো প্রমাণ পাননি।
২০২০ সালের ৭ অক্টোবর কর্পোরেশনের প্রাথমিক তদন্তে ও ব্যাংকের হিসাব বিবরণী মূল্যায়নের পর জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি স্পষ্ট হয়।
এসবিসি অডিটরদের জানায়, গত ৬ অক্টোবর এক বিমা কর্মকর্তার চিঠির ভিত্তিতে রফিকুল ইসলামের ব্যাংক হিসাব খোলা, জাল সই ও আবুল কাশেমের অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি জানা যায়। তাৎক্ষণিকভাবে ডিজিএমের নেতৃত্বে তদন্ত দল গঠন করা হয়।
প্রাথমিক তদন্তে অনিয়মের অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হওয়ায় করপোরেশনের ৬২০তম বোর্ড সভার সিদ্ধান্তের পর কাশেমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কাশেমের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। এক পর্যায়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে কাশেম জামিনে মুক্ত হন বলে এসবিসির এক কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে কাশেম বা তার আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
দুদকের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল হক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। এখন তার বিচার চলছে।'
২০১৮ ও ২০১৯ সালে বিমা প্রতিষ্ঠানটির অডিটের সময় সিএজি কার্যালয়ের তদন্তে দেখা গেছে, ২০৯ কোটি ৯৪ লাখ টাকার আর্থিক অনিয়মের ১৩ অভিযোগের মধ্যে অর্থ আত্মসাৎ অন্যতম।
দেশের একমাত্র রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন নন-লাইফ বিমা ও পুনঃবিমা রপ্তানি ক্রেডিট গ্যারান্টি সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সাধারণ বীমা করপোরেশন ৮ আঞ্চলিক কার্যালয় ও ৭৭ শাখার মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
সংক্ষেপিত: ইংরেজিতে পুরো প্রতিবেদনটি পড়তে এই Financial irregularities cost Sadharan Bima Tk 210cr লিংকে ক্লিক করুন
Comments