‘মৃত্যুর আগের রাতে শ্বশুরবাড়ি থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিল ইলমা’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী ইলমা চৌধুরী মেঘলা মৃত্যুর আগের রাতে বনানীর শ্বশুরবাড়ি থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন বলে তার বাবা সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন।
গত ১৪ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা ইলমাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সেখান থেকে পুলিশ তার মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
আজ সোমবার সন্ধ্যায় দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপকালে ইলমার বাবা সাইফুল ইসলাম বলেন, '১৪ ডিসেম্বর রাতে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা আমার মেয়েকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে যায়, আর আমাদের আসতে বলে। সেখানে যাওয়ার পর মেয়ের স্বামী কথা প্রসঙ্গে জানায় যে আগের রাতে ইলমা বাড়ি থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিল।'
'চার তলা থেকে নামলেও ভবন থেকে ইলমা বের হতে পারেনি। পরে তারা মেয়েকে ধরে ঘরে নিয়ে যায় ও আটকে রাখে,' বলেন তিনি।
ইলমার বাবা আরও বলেন, 'সেদিন হাসপাতালে গিয়ে মেয়ের শরীরে অনেক আঘাতের চিহ্ন পেয়েছি। মেয়ে স্বাধীনতা চেয়েছিল। তারা এজন্য নির্যাতন করেছে।'
'মেয়ে কেন পালাতে চাইবে? তার শরীরে কেন আঘাতের চিহ্ন?' প্রশ্ন করেন তিনি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন এখনও পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।
'ইলমার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা অনেক প্রভাবশালী' উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'ইলমার মৃত্যুর ঘটনায় তার স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি ৩ জনের নামে মামলা হয়েছে। অথচ পুলিশ কেবল ইফতেখারকে রিমান্ডে নিয়েছে।'
'শ্বশুর-শাশুড়িকে জিজ্ঞাসাবাদ পর্যন্ত করেনি পুলিশ,' অভিযোগ করে তিনি বলেন।
জানতে চাইলে বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আযম মিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ইলমার স্বামী ইফতেখারকে দ্বিতীয় দফা রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তবে এখনও হত্যার বিষয়ে তিনি কিছু স্বীকার করেননি।'
ইলমার শ্বশুর-শাশুরিকে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি বলেন, 'আমাদের তদন্ত অব্যাহত আছে। প্রয়োজন হলে আমরা তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করব।'
চলতি বছরের এপ্রিলে কানাডাপ্রবাসী ইফতেখারের সঙ্গে বিয়ে হয় ঢাবির নৃত্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী ইলমার। এরপর ঢাকার বনানীতে শ্বশুরবাড়িতে থাকতে শুরু করেন। তার সহপাঠীদের অভিযোগ, বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ির ইচ্ছার বিরুদ্ধে তিনি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। এ কারণে তাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।
Comments