মানিকগঞ্জে বন্ধ হচ্ছে না অবৈধভাবে বালু উত্তোলন
মানিকগঞ্জে বন্ধ হচ্ছে না কালীগঙ্গা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করায় প্রতি বছরই ভাঙনের মুখে পড়ছে ফসলি জমি, রাস্তা-ঘাট।
পৌরসভার আওতাধীন জয়নগর এলাকায় ইতোমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে শত বিঘা ফসলি জমি। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে একটি সেতু, শতাধিক সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা ও ফসলি জমি। তবু বন্ধ হয়নি বালু উত্তোলন।
বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন অনুযায়ী সেতু, কালভার্ট, ড্যাম, ব্যারেজ, বাঁধ, সড়ক, মহাসড়ক, বন, রেললাইনসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা অথবা আবাসিক এলাকার এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু বা মাটি উত্তোলন নিষিদ্ধ।
জয়নগর এলাকার দুই পাশে রয়েছে বেউথা এবং তরা সেতু। জয়নগরে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের কুফল ভোগ করছে আন্ধারমানিক, চর বেউথা, বান্দুটিয়া এবং পৌলি এলাকার বাসিন্দারাও।
বছরের পর বছর আইন লঙ্ঘন করে বড় বড় ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দের দাবি, তাদের প্রতিবাদ কোনো কাজে আসেনি। বরং নানা ধরনের হুমকি-ধামকির মুখে পড়তে হয়েছে। এতে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে প্রশাসনের ভূমিকা।
পরিচয় গোপন রাখার শর্তে জয়নগরের কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, প্রতিবাদ করে অতীতে অনেকেই হয়রানির শিকার হয়েছেন। এখন তাই কেউ আর সাহস করেন না। গণমাধ্যমে কথা বললেও প্রভাবশালী মহল চড়াও হয়।
গত ৭ জুলাই মানিকগঞ্জের পৌর মেয়র মো. রমজান আলী এলাকাবাসীর পক্ষে জেলা প্রশাসকের কাছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ ও বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আবেদন করেন।
কালীগঙ্গার তীর ঘেঁষে জয়নগর, আন্ধারমানিক, চর বেউথা ও পৌলি এলাকায় প্রায় ২৫ হাজার মানুষেরর বসবাস। ইতোমধ্যে গৃহহীন হয়েছেন শতাধিক মানুষ। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে বেউথা সেতু, জয়নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জয়নগর উচ্চ বিদ্যালয় ও ডা. যোসেফ মেমোরিয়াল হাসপাতাল। বেউথা সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ৫০ হাজার মানুষ যাতায়াত করে।
রমজান আলী তার আবেদনে উল্লেখ করেছেন, জরুরিভিত্তিতে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করা না হলে এসব এলাকা এবং স্থাপনাগুলো নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ বলেন, 'এলাকার ক্ষতি করে, সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে কেউ বালু উত্তোলন করতে পারবেন না। আমি ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে (ইউএনও) নির্দেশ দিয়েছি। জনস্বার্থে যা যা করণীয়, তা করা হবে।'
Comments