মহাস্থানগড়ে মিলেছে গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন

গত ১ মার্চ মহাস্থানগড়ের জাহাজঘাটা সংলগ্ন বৈরাগীর ভিটায় খননকার্য শুরু করে। ছবি: মোস্তফা সবুজ/স্টার

দক্ষিণ-এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান বগুড়ার মহাস্থানগড়। ২৫০০ বছর আগের এই দুর্গ নগরীতে প্রত্নতাত্ত্বিক খনন চালিয়ে এবার মিলেছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন এবং অবকাঠামো।

এসব প্রত্নবস্তুর মধ্যে আছে একটি পোড়ামাটির তৈরি মূর্তির মাথার ভগ্নাংশ, অলঙ্কৃত ইট, বেশ কিছু স্থাপনার নিদর্শন এবং একটি লিপিযুক্ত সীলমোহর।

তবে এই নিদর্শনগুলো ঠিক কোন সময়ের বা কোন আমলের তা নির্দিষ্ট করে এখনো জানাননি স্থানীয় প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

খননে পোড়ামাটির তৈরি মূর্তির মাথার ভগ্নাংশ, অলঙ্কৃত ইট পাওয়া গেছে। ছবি: মোস্তফা সবুজ/স্টার

ধারণা করা হচ্ছে নিদর্শনগুলোর বেশিরভাগ দশম শতাব্দীর বা পাল আমলের।

এ খননকার্যের মাঠ পরিচালক ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের (রাজশাহী-রংপুর অঞ্চলের) আঞ্চলিক পরিচালক ডক্টর নাহিদ সুলতানা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এখানে ৭৫০ থেকে ১২০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত পাল রাজারা শাসন করত। ধারণা করা হচ্ছে এগুলো সেই আমলের নিদর্শন।'

'তবে সিলমোহরের ইনস্ক্রিপশনে কী লেখা আছে তা পাঠ উদ্ধারের পর সঠিকভাবে বলা যাবে,' বলেন তিনি।

খননে পাওয়া লিপিযুক্ত সিলমোহর। ছবি: মোস্তফা সবুজ/স্টার

অন্যদিকে অলঙ্কৃত ইটগুলো পাল আমলে মূলত স্তূপা বা মন্দিরের সাজসজ্জায় ব্যবহার করা হতো বলে জানান তিনি।

গত ১ মার্চ স্থানীয় প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের একটি দল মহাস্থানগড়ের জাহাজঘাটা সংলগ্ন বৈরাগীর ভিটায় খননকার্য শুরু করে।

নাহিদ সুলতানা বলেন, 'মহাস্থানগড় বা প্রাচীন প্রাচীন পুণ্ড্র নগরের একেবারে ভেতরে জাহাজঘাটা সংলগ্ন বৈরাগীর ভিটা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নস্থান। এখানে অনেক আগে ১৯২৮-২৯ সালে ভারতীয় প্রত্নতত্ত্ববিদ কে এন দীক্ষিত প্রথম খননকার্য পরিচালনা করেছিলেন।'

'তার খননকৃত সেই স্থানগুলো কালের বিবর্তনে বর্তমানে আবৃত অবস্থায় আছে। ওই স্থানগুলো পর্যটক, গবেষক এবং দর্শকদের দেখার ব্যবস্থা করে দিতে সরকার ব্যাপকভাবে খননের সিদ্ধান্ত নেয়,' যোগ করেন তিনি।

পর্যটক, গবেষক ও দর্শকদের জন্য খুলে দিতে সরকার এখানে খননের সিদ্ধান্ত নেয়। ছবি: মোস্তফা সবুজ/স্টার

এ সিদ্ধান্তের পর এই প্রত্নস্থানগুলোতে পুনরায় খননকার্য পরিচালনা শুরু হয়।

ডক্টর নাহিদ সুলতানা আরও বলেন, 'গত ৩ বছরে আমরা কে এন দীক্ষিতের খনন করা প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো প্রাথমিকভাবে উন্মোচন করেছি। পাশাপাশি আরও নতুন কিছু প্রত্নস্থান নতুনভাবে উন্মোচন করেছি।'

'বৈরাগীর ভিটায় ইতোমধ্যে আমরা ২টি বৌদ্ধস্তূপ এবং মন্দিরের অংশবিশেষ উন্মোচন করেছি,' যোগ করেন তিনি।

এই খননকার্য পরিচালনাকারী দলে আরও ছিলেন বগুড়া মহাস্থান জাদুঘরের কাস্টডিয়ান রাজিয়া সুলতানা, রংপুর তাজহাট জমিদারবাড়ির কাস্টডিয়ান হাবিবুর রহমান, রাজশাহীর পুঠিয়া রাজবাড়ির সহকারী কাস্টডিয়ান হাসানাত-বিন ইসলাম এবং কয়েকজন সার্ভেয়ার, ফটোগ্রাফার ও ড্রাফটসম্যান।

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka condemns desecration of national flag in Kolkata

Condemns violent protests outside its Deputy High Commission in Kolkata

3h ago