প্রতিমন্ত্রী এলেন, সহায়তা-বক্তব্য দিলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়িতে গেলেন না
গতকাল দুপুর থেকে প্রায় সারা দিন টানা বৃষ্টি। দুপুরের পরপরই ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান ত্রাণ সহায়তা দিতে রংপুরের পীরগঞ্জের মাঝিপাড়ায় আসেন। তখন দুপুর ৩টা গড়িয়ে গেছে। স্থানীয় একটি মাদ্রাসার মাঠে ত্রাণ সহায়তা বিতরণ করার কথা ছিল। তবে বৃষ্টির কারণে মাদ্রাসা মাঠে তৈরি মঞ্চে না গিয়ে মাদ্রাসার ভেতরে একটি কক্ষে বসেন।
দুর্বৃত্তদের অগ্নিসংযোগে ২৫টি পরিবারের জন্য রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি যে ৪টি তাবু টানিয়ে থাকার ব্যবস্থা করেছে। বৃষ্টিতে দুটিতে পানি প্রবেশ করে। সেই অবস্থায় মানুষ ছুটছেন কোথায় ত্রাণ পাওয়া যায়।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ত্রাণ হিসেবে ৬১টি পরিবারকে কিছু গো-খাদ্য এবং এবং শিশু খাদ্য দেন। সেই সঙ্গে পরিবার প্রতি ১০ হাজার টাকা করে নগদ অনুদান দেন। প্রতিমন্ত্রী যে কক্ষে বসেছিলেন তার বাইরে বৃষ্টির মধ্যে এলোমেলোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অনেক মানুষকে ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়।
সেখানেই প্রতিমন্ত্রী বক্তব্য রাখেন। তার বক্ত্যবের মূল কথা হলো, 'দেশের ভেতর অরাজকতা সৃষ্টি করে, ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার জন্য বিএনপি-জামায়াত প্রাণ-পন চেষ্টা করছে।' বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মন্ত্রী গাড়িতে উঠে চলে যান।
মাত্র ১০০ মিটার দূরে মাঝিপাড়ায় না যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। অনেকে জানতেও পারেননি সরকারের পক্ষ থেকে কে এসেছিলেন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মাঝিপাড়ায় গিয়ে দেখা যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে কাজ শুরু করেছে স্থানীয় প্রশাসন। বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন তাদের খাবারের ব্যবস্থা করেছে। ঘর-বাড়ি মেরামত কাজে নিজেই সহায়তা করছেন কনক মালা। দুর্বৃত্তদের অগ্নিসংযোগে তার ৪টি ঘর পুড়ে গেছে।
কনক মালা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ত্রাণ পেয়েছি। সঙ্গে ১০ হাজার টাকাও পেয়েছি। কিন্তু কে দিয়েছে তা জানি না। কোনো মন্ত্রী আমাদের কাছে আসেনি।
সাইবা রাণী ডেইলি স্টারকে বলেন, আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আসবেন। নিজে চোখে আমাদের দুঃখ-কষ্ট দেখে যাবেন। আমরা ত্রাণ পেয়েছি। কিন্তু মন্ত্রী নিজে যদি আমাদের আসতেন কাছে তাহলে বেশি স্বস্তি বোধ করতাম।
এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত পীরগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা বিরোদা রানী রায়ের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি বাড়িই যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে তিস্তা নদীর পানি বাড়ায়, ওই এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়ায় তিনি এখান থেকে লালমনিরহাট গিয়েছেন। ফলে বাড়ি বাড়ি আর যাওয়া সম্ভব হয়নি।
Comments