ঢাকার ভেতরের বাস যাচ্ছে উত্তরবঙ্গে, ভাড়া হাঁকছে প্রায় দ্বিগুণ
ঢাকা শহরের ভেতরে বিভিন্ন রুটে চলাচল করা বাসগুলো এখন উত্তরবঙ্গে বিভিন্ন জেলায় যাত্রী নিয়ে যাচ্ছে। চাহিদার তুলনায় যানবাহনের সংখ্যা কম থাকায় যাত্রীদের কাছ থেকে প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠছে।
আজ বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত গাবতলী বাস টার্মিনালসহ আশপাশের এলাকাগুলো ঘুরে দেখা যায়, যাত্রীদের চাপ মূলত বিকেল থেকে বাড়তে শুরু করে। কাউন্টারের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুপুর পর্যন্ত যাত্রীদের চাপ কম ছিল। বিকেল গড়াতেই পরিস্থিতি বদলে যায়। পোশাক কারখানাগুলোতে ছুটি হওয়ায় বিকেল থেকে হাজারো যাত্রী এসে ভিড় করতে শুরু করেন।
গাবতলী টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, গুলিস্তান থেকে মাওয়ার পথে চলাচল করা এসি বাসগুলোতে সৈয়দপুরের যাত্রী তোলা হচ্ছে। এই পথে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে জনপ্রতি দুই হাজার টাকা। অথচ ভাড়া হওয়ার কথা সাড়ে সাতশ টাকা।
একই পথে দোতলা বাসের ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ১,২০০ টাকা। ঢাকা শহরের ভেতরে চলাচল করা বাসগুলো এই ভাড়া নিচ্ছে ১,৩০০ টাকা পর্যন্ত।
তবে টিকিট কাউন্টারগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে নির্ধারিত ভাড়া নেওয়ার কথা লেখা থাকলেও টিকিট দেওয়া হচ্ছে না। টার্মিনাল সূত্রগুলো বলছে, কাউন্টার থেকে টিকিট বিক্রি না করে বাসের গেটে বাড়তি ভাড়া আদায় করে যাত্রী তোলা হচ্ছে।
একই টিকিট দুই জনের কাছে বিক্রি করার ঘটনাও আজ দেখা গেছে। গাবতলী থেকে মাগুরাগামী পূর্বাশা পরিবহনের দুটি টিকিট কিনেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমান ও মো. শাওন। প্রত্যেকটি টিকিটের দাম নেওয়া হয় ৬৫০ টাকা। সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় বাস ছাড়ার আধা ঘণ্টা আগে তারা টার্মিনালে এসে দেখেন তাদের টিকিট বাড়তি দামে অন্য দুই যাত্রীর কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে তাদের হাতাহাতি পর্যন্ত হয়।
যাত্রীর অভিযোগ সম্পর্কে কাউন্টারের ম্যানেজার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বাস ছাড়ার আধা ঘণ্টা আগেও ওই দুই যাত্রী গাড়িতে না ওঠায় আমরা ভেবেছিলাম তারা হয়ত আর আসবেন না। যাত্রীদের প্রচণ্ড চাপ থাকায় সিট দুটি আবার বিক্রি করে দেওয়া হয়।
সন্ধ্যা সোয়া ৬টা পর্যন্ত এই ঘটনা নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে পূর্বাশা পরিবহনের শ্রমিকদের বচসা চলে।
গাবতলীতে বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কনট্রোল রুমে কর্তব্যরত একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডেইলি স্টারকে বলেন, গার্মেন্টস কারখানায় ছুটি হওয়ার পর বিকেলে ভিড় বেড়েছে। এই সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে ঢাকার ভেতরের লোকাল বাসগুলো। এই বাসগুলো যাত্রীদের কাছে যাওয়া এবং ফিরে আসার ভাড়া ধরে আদায় করছে।
কাউন্টারে টিকিট বিক্রি না করে রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া নিয়ে টিকিট বিক্রির অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, ৮০ ভাগ টিকিট নির্ধারিত দামে আগেই বিক্রি হয়ে গেছে। এভাবে বাড়তি ভাড়া নিয়ে ব্যাপকভাবে টিকিট বিক্রির সুযোগ নেই। তবে আমরাও এমন সামান্য কিছু অভিযোগ পেয়েছি।
Comments