গাইবান্ধায় আতঙ্ক ছড়ানো প্রাণীটির নাম খেঁকশিয়াল
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় হঠাৎ করে আক্রমণ করে মানুষের মাঝে আঙ্কক ছড়িয়ে দেওয়া প্রাণীটির নাম খেঁকশিয়াল। গত ২ দিন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বন বিভাগের ২ তদন্তকারী দল। তাদেরকে সহায়তা করেছে স্থানীয় শিক্ষার্থীদের একটি পরিবেশবাদী সংঘটন 'তীর'।
আজ বুধবার সকালে বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন রাজশাহীর বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ কর্মকর্তা রাহাত হোসেন।
ভাইরাসে আক্রান্ত এই শিয়ালের কামড়ে গতমাসে উত্তর হরিনাথপুর গ্রামের এক মসজিদের ইমাম চিকিৎসাধীন অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। এরপরে পলাশবাড়ী উপজেলার প্রায় ৫টি গ্রামের মানুষকে আক্রমণ করে এই পাগলা শিয়াল যার মধ্যে শিশু ও নারী রয়েছেন।
আক্রান্তের পর চারিদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এই সময় মূলধারার গণমাধ্যম ও একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে 'গাইবান্ধায় অজানা প্রাণীর আক্রমণ' শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করলে পুরো জেলায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
প্রাণীটির আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে পলাশবাড়ী উপজেলার হরিনাথপুর, তালুক কেওড়াবাড়ি, কিশামত কেওড়াবাড়ি, খামার বালুয়া, ফতের ভিটাসহ আরও কয়েকটা গ্রামের মানুষ স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আবেদন জানায়।
দেরিতে হলেও বন বিভাগ স্থানীয় প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান 'তীর' প্রাণীটিকে শনাক্ত করার উদ্যোগ নেয়। এর ধারাবাহিকতায় গতকাল মঙ্গলবার বন বিভাগ ঢাকা থেকে ৩ সদস্যের একটি বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ দল পাঠায়। তার সঙ্গে রাজশাহীর বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের ৪ সদস্যের একটি দল তাদের সঙ্গে যোগ দেয়।
শিক্ষার্থীদের পরিবেশবাদী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রিফাত হাসান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রাণীটি শনাক্তের জন্যে আমাদের একটি দল গত ৫ দিন ধরে আক্রান্ত এলাকায় জরিপ করে। আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলে, তাদেরকে বিভিন্ন প্রাণীর ছবি দেখিয়ে প্রাণীটি সম্পর্কে ধারণা নেওয়ার চেষ্টা করে। এ ছাড়া, প্রাণীটির পায়ের ছাপও শনাক্ত করার চেষ্টা করা হয়।'
'বন বিভাগের পাঠানো বিশেষজ্ঞ দল তাদের সংগৃহীত তথ্য-উপাত্ত নিয়েও কাজ করে। পরে আজ সকালে প্রাণীটিকে শনাক্ত করা হয়,' বলেন রিফাত হাসান।
এ ছাড়া, 'তীর'র বগুড়া ও গাইবান্ধা শাখার সদস্যরা আক্রান্ত এলাকায় যাতে ভীতির সঞ্চার না হয় সেই জন্য মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরির কাজ করে। পাশাপাশি তারা অনলাইনেও সচেতনতামূলক প্রচার চালিয়ে যায়।
Comments